ঢাকা,বুধবার, ১৩ নভেম্বর ২০২৪

মহেশখালীর পিআইও’র ঔদ্বত্য ‘আমি অস্ত্র ফেলে দিলেও প্রশিক্ষন ফেলিনি’

12144705_889534974455838_5989135785643671443_nমহেশখালী প্রতিনিধি :::
মহেশখালী উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) শফিউল আলম সাকিব স্থানীয় একজন সংবাদকর্মীর বিরুদ্ধে মিথ্যা সংবাদ পরিবেশনের অভিযোগ তুলে অত্যন্ত রাগতস্বরে বলেছেন-‘আমি
রাজনৈতিক দলের ক্যাডার ছিলাম। তবে অস্ত্র ফেলে দিলেও প্রশিক্ষন ফেলিনি।’ মহেশখালী উপজেলা পরিষদ অফিসে গতকাল বৃহষ্পতিবার অনুষ্টিত মাসিক আইন শৃংখলা কমিটির সভায় খোদ স্থানীয় এমপি’র উপস্থিতিতে নবম গ্রেডের একজন সরকারি কর্মকর্তা এরকম ঔদ্বত্যপূর্ণ কথা বলেন। এই সরকারি কর্মকর্তার এরকম ঔদ্বত্যপূর্ণ আচরণ নিয়ে রিতীমত তোলপাড় শুরু হয়েছে। ইতিমধ্যে তার অপসারণের দাবীও উঠেছে।
বিভিন্ন সুত্রে জানা গেছে, সরকারি এই কর্মকর্তা জামায়াত-শিবির অধ্যুষিত চট্টগ্রামের লোহাগড়া উপজেলার বাসিন্দা। এ কারনে তার বিরুদ্ধে ছাত্র জীবনে জামায়াত-শিবিরের রাজনীতিতে জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে। তবে তিনি এ অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন-‘আমার বিরুদ্ধে জামায়াত শিবিরের রাজনীতির সাথে জড়িত থাকার অভিযোগ সত্য নয়। তদুপরি পরিষদের সভায়ও আমি এ ধরনের বক্তব্য রাখিনি।’
জানা গেছে, মহেশখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবুল কালামের সভাপতিত্বে উপজেলা আইন-শৃংখলা কমিটির সভা গতকাল বৃহষ্পতিবার উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে অনুষ্টিত হয়। সভায় প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন মহেশখালী-কুতুবদিয়া আসনের এমপি আশেক উল্লাহ রফিক। উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের নব নির্বাচিত চেয়ারম্যানরাও এসভায় উপস্থিত ছিলেন।
সভায় উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) শফিউল আলম সাকিব তার বক্তব্যে বলেন-স্থানীয় সংবাদকর্মী মহেশখালী উপজেলা সদরের বাসিন্দা রমজান আলী বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তাকে (পিআইও) জড়িয়ে দুর্নীতি এবং ব্যক্তিগত বেশ কিছু বিষয়ে লেখালেখি করেছেন। যা কিনা মানহানিকর বলেও তার অভিযোগ। তিনি ওই সংবাদ কর্মীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার দাবী জানিয়ে রাগতস্বরে এক পর্যায়ে রাজনৈতিক ক্যাডার থাকা এবং অস্ত্র ফেলে দেয়ার কথা প্রকাশ্য সভায় বলেন। তবে তিনি কোন রাজনৈতিক দলে বিশ্বাসী ছিলেন সেটা উল্লেখ করেননি।
এ প্রসঙ্গে সভায় উপস্থিত এমপি আশেক উল্লাহ রফিকের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন-‘পিআইও সভায় হয়তোবা ইমুশন নিয়ে এসব কথা বলেছেন। তবে এরকম কথা বলা একজন সরকারি কর্মকর্তার জন্য অবশ্যই আপত্তিকর বটে।’ সভার সভাপতি মহেশখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এ প্রসঙ্গে বলেন-‘একজন সরকারি কর্মকর্তার মুখে বলা এসব বিষয়টি নিয়ে আমি একটা সমঝোতা করার ব্যবস্থা করে দেব।’
সভায় উপস্থিত মহেশখালী দ্বীপের নব নির্বাচিত একজন ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান অত্যন্ত দুঃখের সাথে বলেন-‘পিআইও সাহেব সরকারি কর্মকর্তা হয়ে একজন মাননীয় সাংসদের উপস্থিতিতে অস্ত্র ফেলে দেয়ার কথা কিভাবে বলেন ?’ সভায় উপস্থিত মহেশখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বাবুল চন্দ্র বণিক  বলেন-‘একজন সরকারি কর্মকর্তা হিসাবে পিআইও সাহেবের এধরণের কথা বলা ঠিক হয়নি। তিনি যদি কারও বিরুদ্ধে মনক্ষুন্ন হন তাহলে আইনের আশ্রয় নিতে পারতেন।’
কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মোঃ আলী হোসেন এ প্রসঙ্গে বলেন-‘আমি বিষয়টি নিয়ে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহন করব।’ এদিকে কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এ্যাডভোকেট সিরাজুল মোস্তফা এবং সাধারণ সম্পাদক মুজিবুর রহমান গতকাল মহেশখালী উপজেলা পরিষদের সভায় একজন সরকারি কর্মকর্তার ঔদ্বত্যপুর্ণ আচরণের ব্যাপারে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তারা বলেন-একজন সরকারি কর্মকর্তার এরকম ঔদ্বত্যপূর্ণ আচরণ মোটেই গ্রহণযোগ্য নয়। তারা অবিলম্বে তদন্ত সাপেক্ষে এই কর্মকর্তার অপসারণ দাবী করেছেন।

পাঠকের মতামত: